harinja

Wednesday, June 30, 2021

ভোরবেলার স্বপ্ন

অনেকদিন পর আজ ভোর রাতে আমরা তিন বোন হাত ধরে হাঁটছিলাম। কতদিন পরে ! রিুঙ্কু আর আমি টিঙ্কুর দুহাত ধরে দুপাশে হেঁটে যাচ্ছি ডোভার লেনে কথা বলতে বলতে, কত কথা!

 টিঙ্কু বলছে, অপারেশনটা হয়ে গেল, এখন আর কোনো চিন্তা নেই । রিঙ্কু আমার দিকে তাকাল, আমি রিঙ্কুর দিকে।

টিঙ্কু বলছে, আমার তো আসলে আট তারিখে ফাঁড়া ছিল...

-          বলিস নি কেন রে?

-          বলিনি তোমায় ? আমার তো মনে হয় বলেছি । কি জানি ! মনে হয় বলব ভেবেছিলাম।

-          কিসের ফাঁড়া রে?

-          আমি আসলে দেখেছিলাম, আমাকে যম দড়ি দিয়ে বাঁধছে।

-          বলিস নি কেন রে?

-          কি জানি ! যাক্‌ গে এখন তো আমি ভাল আছি । আর তো কোনো চিন্তা নেই। পুপুন কোথায় গো?

-          পুপুন দিল্লীতে আছে , চন্দনও , মা আছে ওদের সঙ্গে , পুপুনের পরীক্ষা তো তাই ।

-       ভালো করেছো । পুপুনের জন্যে আমার খুব চিন্তা । ওর লেখাপড়া শেষ না হওয়া অবধি আমাকে বেঁচে থাকতেই হবে। চন্দন ওকে ঠিক বোঝে না।

 

ডোভার লেন থেকে কিভাবে যেন বি পি পোদ্দার হাসপাতালে গেলাম , কেন গেলাম তা জানি না । আমাদের পেছনে অনেক ভিড় । সেই সব মানুষেরা সবাই এসেছে আমাদের সঙ্গে, যারা টিঙ্কুকে শ্মশানে নিয়ে গিয়েছিল । হাসপাতালের গেটে ভীষণ চিৎকার ...


Tuesday, June 29, 2021

 এইসব সেরে গেলে 

এইসব সেরে গেলে মা-কে নিয়ে চেরাপুঞ্জি যাবো, এরোপ্লেনে করে মেঘেদের কাছে। এইসব সেরে গেলে হাঁটু মুড়ে কুচিয়ে কুচিয়ে ছিঁড়ে ফেলবো অসুখের দিনরাত্রি। আর, 'সোস্যাল ডিস্ট্যান্স' শব্দটা ফালা ফালা করে দেবো।

এইসব সেরে গেলে চলন্ত ট্রেনে বসে অন্ধকার মাঠ পার করে বিন্দু বিন্দু আলো দেখবো। আর, তোমার সঙ্গে দুরন্ত ঢেউ ভাঙবো ব্ল্যাক সি-তে। 

এইসব সেরে গেলে মুখোশ পোড়ানোর সভা করবো আমরা হাজরা মোড়ে। হাতে হাত রেখে একে অন্যের মুখ দেখবো।

এইসব সেরে গেলে তেলিনীপাড়া থেকে গঙ্গায় জল কেটে কেটে ফেয়ারলি প্লেসে আসবো। তখন আকাশ থেকে রেইনবোর রঙ ছিটকে আসবে তোমার চোখে...

 এইসব সেরে গেলে একবার কনট প্লেসে ওয়েঙ্গার্সে গিয়ে ক্যারামেল পুডিং খাবো, আর মেরিন ড্রাইভে হাঁটবো তোদের সঙ্গে।

এইসব সেরে গেলে 'মহামারী' শব্দটা ভুলে যাবো বেমালুমতখন আবীর আবীর স্বপ্নগুলো লকার থেকে বার করে তাকিয়ে থাকবো,  দুচোখে মায়া...

Monday, June 28, 2021

বিষাদের দিনরাত্রি


হে বিশ্বচক্রে ঘূর্ণিয়মান ভাইরাস
হে সভ্যতার বিকশিত দন্ত,
হে বিষাক্ত নিঃশ্বাস,
হে মাত্রাতিরিক্ত নির্জনতা,
তোমাদের স্পর্শে বেড়ে উঠেছে
যে বিষণ্ণ দিনরাত্রি, যে নৈঃশব্দ্যের হাওয়া,
যে অন্তহীন অন্ধকার,
সেই তীব্র অসুখ, সেই ডুবন্ত চাঁদ,
সেই কৃষ্ণপক্ষের মধ্যে দিয়ে
এক দিশাহীন গোলকধাঁধায় ঢুকে যাচ্ছে মানুষ...
আর, হাওয়ায় ভেঙে যাচ্ছে বিষাদের দিনরাত্রি...